৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

পুলিশের মিস ফায়ারে আহত মনিরের খোঁজ নিচ্ছেনা কেউ, প্রয়োজন আর্থিক সহায়তা ও উন্নত চিকিৎসা

আপডেট: মার্চ ১৪, ২০২৪

| nirvik sangbad


রাজাপুর (ঝালকাঠি) প্রতিনিধি : টহলরত এক পুলিশ সদস্যে’র রাইফেল থেকে অসাবধানতাবশত ছোটা গুলিতে (মিস ফায়ার) আহত হয়েছিলেন ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া ইউনিয়নের লেবুবুনিয়া বাজারের চা দোকানি মনির মাহমুদ। গত ২৩ ডিসেম্বর শনিবার রাতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তবে এ ঘটনায় রাজাপুর থানা পুলিশের কনস্টেবল নুরুল ইসলামকে সাময়িকভাবে পদচ্যুত (সাসপেন্ড) করা হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ আহত মনির মাহমুদ সাতুরিয়া ইউনিয়নের উত্তর তারাবুনিয়া গ্রামের রোলা এলাকার মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে। তার লেবুবুনিয়া বাজারে চা-পানের একটি দোকান ছিলো। সেই দোকানের আয়েই চলতো মনিরের ৪ সদস্যের সংসার।
আহত মনিরকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে এলেও এখনো পরিপূর্ন সুস্থ্য হতে পারেনি। তার পায়ে এখনো রয়েগেছে সেই গুলির ইসপ্রিন্টার । হারিয়ে ফেলেছেন কর্মক্ষমতা। বর্তমানে এলোমেলো হয়ে আছে চা দোকানি মনিরের জীবন ও সংসার। কেউ নিচ্ছেনা তার খবর, প্রতিনিয়তই তাকে পরতে হচ্ছে পাওনাদারের রোসানলে। জানাযায়, দোকান পরিচালনার জন্য বিভিন্ন এনজিও এবং স্থানীয় সংস্থা থেকে আনুমানিক ৩ লাখ টাকা ঋণ করেছেন মনির। সব মিলিয়ে সপ্তাহে ১ হাজার ৬০০ টাকা কিস্তি দিতে হয় তার। দোকান ভাড়াও দিতে হয় মাসে ১ হাজার ৮০০ টাকা। দু-তিন মাসের ভাড়াও বকেয়া রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে কর্মক্ষমতা না থাকায় না পারছেন শোধ করতে ঋণের টাকা না পারছে চালাতে সংসার।
গুলিবিদ্ধ মনির জানান, আমি তখন চা বানাচ্ছিলাম। হঠাৎ কনস্টেবল নুরুল ইসলামের বন্দুক থেকে গুলি ছোটে। চায়ের কেটলি ভেদ করে গুলি লাগে আমার বাঁ পায়ে। এরপর পুলিশ সদস্যরাই আমাকে হাসপাতালে নেন। সেই রাতে টহল দলের নেতৃত্বে থাকা রাজাপুর থানার এসআই মোঃ আজাদ জানান, লেবুবুনিয়া বাজারে টহল শেষে আরেক জায়গায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে তারা অটোরিকশায় উঠছিলেন। হঠাৎই কনস্টেবল নুরুল ইসলামের আগ্নেয়াস্ত্র থেকে মিস ফায়ার হয়। এতে দুর্ঘটনাটি ঘটে। শেবাচিমের চিকিৎসকরা মনিরকে জানিয়েছিলেন, পুরোপুরি সেরে উঠতে তার বেশ সময় লেগে যাবে। মনির আরো বলেন, এই গুলিতে শুধু আমিই শেষ হইনি হয়েছে আমার পুরো সংসার। পায়ে গুলি নিয়ে কোন কাজ কর্ম করতে পারছিনা। তাই ঠিকমত সংসারও চলছেনা। ডাক্তার জানিয়েছে এর চিকিৎসা করাতে হলে আমাকে বিদেশ যেতে হবে। কিন্তু আমি বিদেশ যেতে হলে লাগবে ৬-৭ লাখ টাকা। আমিতো ঠিক মত খেতেই পারছিনা। বিদেশ যাওয়ার টাকা পাবো কই।
এ ব্যাপারে রাজাপুর থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, হাঁটার সময় এক কনস্টেবলের হাতিয়ার থেকে গুলি বের হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি বলেন কনস্টেবল মনিরের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যাবস্থা গহন করা হয়েছে। আর আহত ব্যক্তির অবস্থা গুরুতর নয়। পুলিশ তার চিকিৎসার খোঁজখবর রাখছে। আর্থিক বিষয়টিও দেখার আশ্বাস দেন তিনি। ঝালকাঠির পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল বলেন, কনস্টেবল নুরুল ইসলামকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। আহত মনির মাহমুদের চিকিৎসার খোঁজ রাখা হচ্ছে।